লিখেছেন - নিগার বর্ষা জুলাই ২২, ২০১৯
কোনো
কিছু ভালো না লাগলে ভ্রু কুঁচকে বিরক্ত প্রকাশ করা সোমার অভ্যাস।
এমনকি মনোযোগ দিয়ে কাজ করার সময়েও ভ্রু কুঁচকে থাকে। এখন ভ্রু
কুঁচকানো সোমার বদ অভ্যাস হয়ে গেছে। মায়ের এত বকা খেয়েও ভ্রু
কুঁচকানো কমে নি। সেদিন আয়নার সামনে দাঁড়াতে হঠাৎ খেয়াল করলো
কপালে ভাঁজের দাগ দেখা দিয়েছে। এটা দেখে সোমার মাথায় হাত আর মাথায়
চিন্তা ঘুরতে থাকে, কপালের এই দাগ কি ভ্রু কুঁচকানোর জন্য? চলুন তবে
জেনে নেই কপালের বলিরেখা হবার কারণ ও কী উপায়ে এটি দূর করা যায়!
কপালের বলিরেখা নিয়ে যত কথা
কারণ
কপালের যে ভাজ দেখা যায় তাই-ই মূলত কপালের রিংকেল বা বলিরেখা।
ত্বকের বয়স হয়েছে তার প্রকাশ এটি। এছাড়াও আরো কিছু কারণ রয়েছে
কপালে বলিরেখা পড়ার। মূলত চারটি কারণে কপালে বলিরেখা পরতে দেখা যায়-
১) অতিরিক্ত
সূর্যের আলোতে ঘোরাঘুরি
৩) বয়স এবং
৪) ফ্রি র্যাডিকেলস
সূর্যের তাপ সবচেয়ে বেশি কপালে পড়ে থাকে। যার কারণে সবার আগে
কপালে বলিরেখার ছাপ দেখা দেয়। আর বর্তমান সময়ের ভেজাল, পল্যুশন,
স্ট্রেস বিভিন্ন কারণতো রয়েছেই। কপালের রিংকেল দেখা যাওয়ার কোনো
বছর বয়সেও ত্বক রিংকেলমুক্ত থাকতে পারে। এটি মূলত আপনার
লাইফস্টাইল, খাওয়া দাওয়া, স্কিন কেয়ারের উপর নির্ভর করে। রিংকেল
যখনই দেখা দিক আর যে কারণে দেখা দিক না কেন বলিরেখা কারো জন্য
আনন্দায়ক নয়। এই বলিরেখা দূর করার জন্য অনেকে ছুটে থাকেন পার্লার বা
বিউটি সেলুনে। তবে আর নয় বিউটি সেলুন, এইবার ঘরোয়া উপায়ে দূর করে
দিতে পারবেন কপালের ভাঁজ। কিভাবে? তবে এবার চলুন জেনে নিন উপায়গুলো!
নারকেল তেল প্রায় সব বাসাতে থাকে। কয়েক ফোঁটা নারকেল তেল নিয়ে
কপালে বলিরেখার জায়গায় আস্তে আস্তে ম্যাসাজ করুন। স্কিনে তেল মিশে
যাওয়া আগ পর্যন্ত ম্যাসাজ করতে থাকুন। এটি প্রতি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার
আগে করুন। নারকেল তেলের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান
ত্বকের র্যাডিকেল দূর করতে সাহায্য করে। ফ্রি র্যাডিকেল ত্বকের বলিরেখা
তৈরিতে ভূমিকা রাখে। নিয়মিত ম্যাসাজ ত্বকের বলিরেখা দূর হয়ে যায়।
২) ক্যাস্টর অয়েল
চুলের যত্নে অনেকে ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করে থাকেন। এইবার কপালের
বলিরেখা দূর করবে এই ক্যাস্টর অয়েল। কয়েক ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল
আঙ্গুলে নিয়ে কপালে বলিরেখার উপর ম্যাসাজ করুন। এটি সারারাত রেখে
দিন। সকালে ফেইসওয়াস দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। ক্যাস্টর
অয়েলে রিসিনোলিক অ্যাসিড (Ricinoleic acid) রয়েছে যাতে স্কিন
কন্ডিশনিং-করে থাকে এবং ত্বকের বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে।
৩) লেবুর রস
প্রাকৃতিক ব্লিচিং লেবুর রস ত্বকের দাগ দূর করার সাথে সাথে কপালের
বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করবে। একটি তুলোর বল লেবুর রসে ভিজিয়ে
নিন। এইবার তুলোটি কপালে বলিরেখার উপর ম্যাসাজ করতে থাকুন।
শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সেনসিটিভ ত্বকের অধিকারীরা লেবুর
রস সরাসরি ত্বকে ব্যবহার করবেন না। সমপরিমাণ লেবুর রস এবং পানি
একসাথে মিশিয়ে ব্যবহার করবেন। এছাড়া সাইট্রাস (citrus) ফল যেমন
লেবু বা কমলার খোসা গুঁড়ো করে নিতে হবে। এর সাথে গোলাপ জল মিশিয়ে
প্যাক তৈরি করুন। এই প্যাকটি ত্বকে ব্যবহার করুন। খাদ্য তালিকায়
সাইট্রাস ফল রাখুন। আপনি চাইলে প্রতিদিন ত্বকে লেবুর রস ব্যবহার করতে
পারেন। লেবুর রসে ভিটামিস সি (Vit-C) এবং ভিটামিস ই ( (Vit-E) রয়েছে
যা সুস্থ ত্বকের জন্য প্রয়োজন। এটি ত্বকের বলিরেখা দূর করার পাশেপাশি
ত্বকের উজ্জ্বলতাও বৃদ্ধি করে।
৪) অ্যালোভেরা জেল
দুই
টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল এবং একটি ডিমের সাদা অংশ একসাথে
মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই প্যাকটি কপালে বলিরেখায় ব্যবহার করুন।
আপনি চাইলে এই প্যাকটি সম্পূর্ণ মুখে ব্যবহার করতে পারেন। ১০-১৫ মিনিট
পর কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি সপ্তাহে দুই থেকে
তিনবার ব্যবহার করুন। অ্যালোভেরা জেল এবং ডিমের সাদা অংশ ভিটামিন
ই-এর অন্যতম উৎস। তারুণ্য দীপ্ত ত্বকের জন্য ভিটামিন ই অনেক বেশি
প্রয়োজন। অ্যালোভেরা জেলের ম্যালিক অ্যাসিড (malic acid) ত্বকের
বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে। ডিমের সাদা অংশে অ্যালবুমিন ত্বকের নমনীয়তা ধরে রাখে।
৫) জোজোবা অয়েল
হেয়ার কেয়ার-এর ডেইলি রুটিনে রাখার মত পারফেক্ট একটি প্রোডাক্ট।
কপালের বলিরেখা দূর করতেও এটি বেশ কার্যকর। কয়েক ফোঁটা জোজোবা
অয়েল আঙ্গুলে নিয়ে কপালে ম্যাসাজ করুন। এটি উপর থেকে নিচের দিকে
ম্যাসাজ করুন। ২০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি
প্রতিদিন ব্যবহার করুন। জোজোবা অয়েলে আছে ভিটামিন ই যা ত্বক থেকে
বয়সের ছাপ কমিয়ে দিয়ে বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে।
এইতো দেখলেন প্রাকৃতিক উপাদানসমূহ!
তবে আপনি যদি প্রাকৃতিক উপাদান
সংগ্রহে ঝামেলা মনে করেন, তবে অনলাইনে
শপ.সাজগোজ.কম বা
সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপ যা যমুনা ফিউচার পার্ক ও সীমান্ত স্কয়ারে
অবস্থিত, সেখান থেকে কপালের বলিরেখা দূর করতে উপযুক্ত প্রোডাক্ট কিনতে পারেন।
তাহলে কপালের ভাঁজ বা বলিরেখা এখন আপনি চাইলেই প্রতিরোধ করা
সম্ভব। যার জন্য প্রয়োজন ত্বকের একটুখানি যত্নের। নিজের যত্ন নিন আর
থাকুন সুন্দর সবসময়
ছবি- সংগৃহীত: সাজগোজ; ইমেজেসবাজার.কম
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন